খুলনার ডুমুরিয়ায় কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি ও জোয়ারে ওঠা পানিতে ফের প্লাবিট হয়েছে বয়ারশিং ও আঁধারমানিক গ্রামে। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ কয়েক হাজার মাছের ঘের। কয়েক বছর যাবত বর্ষা মৌসুমে এ ধরণের ভোগান্তিতে পড়ে আসছে দুই গ্রামের অন্তত ৪০০ পরিবার। জলাবদ্ধতা নিরসনে আঁধারমানিক এলাকায় অতিদ্রুত একটি স্লুইজ গেট নির্মাণের দাবী এলাকাবাসীর।
জানা যায়, উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওতাধীন আঁধারমানিক ও বয়ারশিং গ্রাম দুইটি। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই সামান্য বৃষ্টিতে পানিতে নিমজ্জিত হয়। এলাকায় প্রায় ১ হাজার একর জমি রয়েছে। যেখানে আছে অনেক বসতি, ফসলি জমি ও মাছের ঘের। পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা না থাকার কারণে প্রতিবার ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকার মানুষেদের। একদিকে বৃষ্টির পানি অন্যদিকে অবৈধভাবে উঠানো জোয়ারের পানিতে তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে অঞ্চলটি। আঁধারমানিক একেবিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিও পানিতে নিমজ্জিত।
বয়ারশিং গ্রামের সরোজ মন্ডল জানান, একদিকে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে সুন্দরবুনিয়া ও খলসিবুনিয়া এলাকার কিছু অসাধু ঘের ব্যবসায়ী তাদের মাছ চাষের সুবিধার্থে বিলে জোয়ারের পানি ঢুকায়। যার কারণে ব্যাপকভাবে প্লাবন দেখা দিয়েছে।
ওই এলাকার শ্যামল মন্ডল জানান, পানিতে তলিয়ে তাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পানির চাপে এলজিইডি কর্তৃক সদ্য নির্মানাধীন রাস্তার এক জায়গায় ভেঙ্গে গেছে। মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ দারুল হুদা জানান, রাস্তাটি উঁচু না করলে টিকবে না। শুকনো মৌসুমে আমরা দেখব, রাস্তার যে ডিজাইন রয়েছে সেই অনুযায়ী কাজ হয়েছে কিনা। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে ঠিকাদারকে নিজ খরচে উঁচু করে কাজ করতে হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দিন জানান, পানি নিষ্কাশনের সু-ব্যবস্থা না থাকায় অঞ্চলটি সামান্য বৃষ্টিতেই প্লাবিত হয়। তালতলা রেগুলেটরের মুখে পলি ভরাট হওয়ার কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আপদকালীন সময় দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য আঁধারমানিক ওয়াপদা বাঁধে পাইপ স্থাপন করা হচ্ছে। এখান দিয়ে পানি নিষ্কাশন হলে আশা করি দু’এক দিনের মধ্যেই পানি কিছুটা হলেও কমবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন শুক্রবার (১১ই জুলাই) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন অতি দ্রুত গেটের মুখের পলি অপসারণের। আর যারা মাছ চাষের সুবিধার্থে জোয়ারের পানি বিলে ঢুকিয়েছে ইউএনও তাদেরকে কঠোর ভাবে নিষেধ করেছেন।
খুলনা গেজেট/এসএস